ব্রিফকেস
– সুপ্রতিম রং
আজ আমি ব্রিফকেস গুছিয়ে চলেছি ;
সমস্ত বে-রঙীন – রামধনু মাখা প্রেমকে
পরিপাটি ভাঁজ করে; স্তরে স্তরে ।
সেদিন সেই অস্ত শরীরের; ঘেমো
কোঁচকানো ভালোবাসা নামক যে জামাটা
তুমি খুলে ফেলেছিলে নীলা !
নাকাচা অবস্থায়, বার কয়েক ইস্ত্রি করেছি ;
তোমার গায়ের গন্ধটাকেও ভাঁজ করেছি;
রেখেছি সবার নীচে, যাতে উবে না যায় !
প্রকান্ড ঝড়ের তান্ডবে যখন
মশারী সমুদ্রে তুফান এসেছিল; এক তিল
নক্ষত্রও আলো দেয়নি; বিদ্যুৎ ঝলকানিতে
দেখেছিলাম তোমার শরীরের চালা ওড়া;
তোমার নিজের ঘর; কী অপরূপ সজ্জা !
সেদিন আমি প্রথম; বিশ্বাস কর – সেই প্রথম
সমুদ্রে স্নান করেছিলাম; ঢেউয়ের অনুভব
করেছিলাম গোটা শরীর; দু’হাতে তখন আমার
দুটো ঢেউ; পরের ঢেউ আরও বড়ো;
ময়ালের মতো পেঁচিয়েছিলে তুমি আমায় !
তারপর প্রকৃতি আরও ভয়ঙ্কর;
কেবলই আমাকে গড়িয়ে খাদে টানছে;
এলোপাথাড়ি শুধু খামচেছি ; নখ- হাতে
মুঠো মুঠো মাটি; অবশেষে খাদ ;
উথাল-পাথাল জলের তোড়ে ভেসে যাচ্ছি;
গোগ্ৰাসে গিলছি সফেন; বড্ড নোনতা।
ছূঁড়ে ফেলে দিল আমাকে; সবুজ ঘাস;
অবিরাম বৃষ্টি – কী শান্তি !
শান্ত হয়েছে তান্ডবী; আমি ভাসতে চাই।
তামাটে গাত্র রক্তাভ আভা দিচ্ছে; ভালো লাগছে, বেশ লাগছে –
সমুদ্র দু’ফাঁক করে সাঁতরে চলেছি আমি ।
আজ আমি ব্রিফকেস গুছিয়ে চলেছি ;
কচি-কচি ঘামের নোনতা বিন্দুটাও নিয়েছি;
মুঠো করে আনা সমুদ্র সফেন এক কৌটোও ;
এই ঢোকালাম; ইস্ত্রি করিনি –
আমাকে আর জামা পড়তে হবে না; তুমি
দু’হাতে এঁকেছ আমায় ।
আজ আমি ব্রিফকেস গুছিয়ে চলেছি।
– সুপ্রতিম রং